fbpx

শিশু কী প্রায় ফ্লু বা সর্দি জ্বরে ভোগে?

ছোট শিশুটির জ্বর বা সর্দি কাশি দেখা দিলে কি করবেন? ছুটবেন ডাক্তারের কাছে তাই তো? সব সময় ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় হয়ে উঠে না, তখন কী করবেন? ঘরোয়া কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে শিশুর জ্বর দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব।

১। খোলামেলা কাপড় পরিধান

জ্বরের সময় শিশুটিকে বেশি কাপড় পরিয়ে রাখবেন না। শিশুটির কাপড় কিছু ঢিলাঢালা করে দিন। কম কাপড় আপনার শিশুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করবে না, বরং তাপমাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করবে। যদি তার শীত লাগে তবে কম্বল বা লেপ জাতীয় কিছু জড়িয়ে দিন।

২। শিশুকে বিশ্রাম দিন

অনেক সময় ভ্যাকসিন দেওয়ার কারণে শিশুর জ্বর হতে পারে। এই ক্ষেত্রে শিশুকে বিশ্রাম দিন। খুব বেশি কাপড় শিশুর গায়ে রাখবেন না। অল্প কাপড় গায়ে রাখুন। বেশি কাপড় গায়ে থাকলে তা ঘেমে শিশুর জ্বর আরও বেড়ে যেতে পারে।

৩। মায়ের দুধ পান

শিশুর বয়স ছয় মাসের কম হলে, তাকে বারবার বুকের দুধ খাওয়ান। আর যদি বয়স হয় ছয় মাসের বেশি, তাহলে অল্প অল্প করে পানি, তরল ও নরম খাবার বারবার খাওয়ানো যেতে পারে।

৪। বাষ্প বায়ু

গরম বাষ্প শিশুর বুকে জমে থাকা সর্দি, কফ বের করে দিতে সাহায্য করে। নবজাতক শিশুদের ক্ষেত্রে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। ঘরে নেবুলাইজার না থাকলে শিশুকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে পারেন। কিংবা একটি কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে তা দিয়ে শিশুর শরীর মুছে দিতে পারেন। এইরকম কয়েকবার করুন। কিছুক্ষণের মধ্যে জ্বর অনেকখানি নেমে যাবে।

৫। স্যুপ পান

শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে শিশুকে স্যুপ দিতে পারেন। হজম করতে পারে এমন সবজি যেমন আলু, গাজর, পেঁয়াজ, আদা দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন স্যুপ। এটি শিশুর অভ্যন্তরীণ ইনফেকশন দূর করার সাথে সাথে শিশুর পেট ভরিয়ে দেবে। এছাড়া শিশুকে আদা পুদিনা চা দিতে পারেন। এরসাথে দুই ফোঁটা বিশুদ্ধ মধু মেশাতে ভুলবেন না। এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল হিসেবে কাজ করবে।

৬। নাক পরিষ্কার

নাকে সর্দি জমে বন্ধ হয়ে যায়। তখন শিশুর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাই নাক পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। নাকের সর্দি পরিষ্কার করার জন্য দোকানে এক ধরণের ড্রপার পাওয়া যায়। আপনি এটি ব্যবহার করতে না চাইলে, এর পরিবর্তে স্যালাইন ব্যবহার করতে পারেন। একটি ড্রপারে সামান্য স্যালাইন নিয়ে সেটি শিশুর নাকের ভেতর দিয়ে দিন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে নাকে জমে থাকা সর্দি বের হয়ে আসছে। একটি কটন বাডস দিয়ে সেটি পরিষ্কার করে ফেলুন।

৭। ফ্যানের নিচে রাখুন

অনেক বাবা মা শিশুর জ্বর আসলে তাকে ফ্যান থেকে দূরে রাখেন। কিন্তু ফ্যান শিশুর শরীরে তাপমাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। তবে হ্যাঁ খুব বেশিক্ষণ শিশুকে ফ্যানের নিচে রাখবেন না। শিশুর ঘরে ফ্যান বন্ধ রাখবেন না। অল্প গতিতে ফ্যান ছেড়ে শিশুকে ফ্যানের নিচে রাখুন।এছাড়াও,

ভেজা প্রস্রাবের কাঁথা বা জামা অনেকক্ষন পড়ে থাকলে বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, তাই কিছুক্ষণ পরপর বাচ্চা প্রস্রাব করেছে কিনা তা চেক করুন। বাইরে যাওয়া অবস্থায় অবশ্যই উচ্চ শোষণক্ষমতাসম্পন্ন এবং বাচ্চার জন্য আরামদায়ক হয় এমন ডায়াপার ব্যবহার করবেন। ঘরে থাকা অবস্থায়ও যদি বাচ্চার দিকে খেয়াল রাখা সম্ভব না হয় তাহলেও ডায়াপার ব্যবহার করাই ভাল হবে।

সতর্ককরণঃশিশু জ্বর বা ফ্লুতে আক্রান্ত হলে, তাকে কোলে নিয়ে কখনোই ধূমপান করবেন না, এমনকি শিশুর সামনেও নয়। রান্নার ধোঁয়ায়ও তার শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই রান্নার সময় রান্নাঘরের জানালা খুলে দিন বা এগজস্ট ফ্যান চালিয়ে দিন। আর শিশুকে কোলে নিয়ে রান্না করা থেকে বিরত থাকুন। যারা নিজেরা ঠান্ডার সমস্যায় ভুগছেন, তারা শিশুকে কোলে নেওয়া ও আদর করা থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে শিশুকে নিউমোনিয়ার প্রতিষেধক দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *